X-ray বা এক্সরে মেশিন কি? বিস্তারিত তথ্য

দূর্ঘটনা বা অন্য কোনো কারণে আমাদের দেহের কোনো অংশের হার ভেঙ্গে যায় তখন ডাক্তার এক্সরে করার জন্য আমাদের পরামর্শ দেন। অনেকেই জীবনে একবার হলেও এক্সরে করেছে।
এক্সরে মেশিন কিভাবে কাজ করে? কোন কন্ডিশনে ডাক্তাররা আমাদের এক্সরে করতে বলেন? এক্সরে কত রকমের হয়? আর এক্সরে করা করা আমাদের শরীরের জন্য Save কী না? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর আমরা এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানতে পারবো।

এক্সরে মেশিন কীভাবে কাজ করে
সূর্য আমাদের আলো দেয় আর এই আলো শক্তির রূপে আমাদের কাছে আসে। এই শক্তি থেকে অনেক বিষ্ময়কর জিনিস ঘটতে পারে। আমরা জানি Electromegnetic Frequency তরঙ্গ রূপে আলো আমাদের পৃথিবীতে এসে পৌছায়।
এই Electromagnetic Radiation অনেক ধরনের হয়। এদের মধ্যে কিছু তরঙ্গ আমাদের কাছে দৃশ্যমান এবং কিছু তরঙ্গ দৃশ্যমান নয়। আমরা যে সমস্ত Electromegnetic তরঙ্গের সাথে সবথেকে বেশি পরিচিত সেগুলো হলো-
Radio Waves
Ultraviolate Rays
Microwave
এই অদৃশ্য তরঙ্গগুলো থেকে আমরা এক্সরেকেউ পায়। তবে চলুন বোঝার চেষ্টা করা যাক এক্সের সাহায্যে কিভাবে হারের ছবি তোলা যায়।
আরো পড়ুন>> আসুন জেনে নিই, X-ray কিভাবে কাজ করে
Wilhelm Conrad Rontgen
১৮৯৫ সালে Wilhelm Conrad Rontgen একজন পদার্থ বিজ্ঞানী Cathode Ray Tube নিয়ে গবেষণা করছিলেন। এখানে একটা কাঁচের কনটিনার ছিলো যেখানে Electron Bean একটা ফ্লোরোছেন্ট ইউন্ড্রোকে আলোকিত করছিলো।
তিনি টিউবটাকে চারেদিকে কার্পোট দিয়ে মুড়ে দেন। যাতে ফ্লোরোসেন্ট আলোটা বাইরে পালিয়ে যেতে না পারে। কিন্তু তখন একটা অতভূত জিনিস ঘটে। কর্পোট দিয়ে মুড়ে দেওয়ার পরেও টিউবের বাইরে একটা পর্দা জলজল করছিলো।
সোজা ভাবে বলতে গেলে একটা অদৃশ্য রশ্মি কর্পোট ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে আসছিল। Wihelm এর কোনো ধারণা ছিলো না যে রশ্মি গুলো আসলে কি। তাই তিনি এই রশ্মি গুলোর নাম দিয়ে দেন X-Ray। এই আবিস্কারের জন্য তিনি নোবেলও পেয়ে যান।
এরপর ১৮৯৬ সালে X-Ray মেশিনগুলোকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করার শুরু হয়ে যায়। যেমন হারের ফেকচার পরিক্ষার করার জন্য এবং যুদ্ধের সময় সৈন্যদের গায়ে কোথায় গুলি লেগেছে সেটা দেখার জন্য।
এই একটা ছোট্ট আবিস্কার চিকিৎসা ক্ষেত্রকে অনেক দূরে এগিয়ে নিয়ে যায়। শরীরের কোনো অংশকে না কেঁঁটে, একফোটা রক্ত খরচ না করে, কার শরীরে মধ্যে কি হচ্ছে সেটা দেখতে পাওয়াটা বিপ্লবের থেকে কম ছিরো না।
আরো পড়ুন>> MRI vs. X-Ray: Pros, Cons, Costs & More
এক্সরে কিভাবে তৈরি হয়
X-Ray তৈরি হয় যখন কোনো ঋণাত্মক চার্জযুক্ত ইলেকট্রন বিদ্যুৎ দ্বারা উৎতপ্ত হয় এবং ইলেকট্রন নির্গত হয়। এর ফলে শক্তিও উৎপন্ন হয়। এই শক্তিকে খুব উচ্চ বেগে ধাতব প্লেটের দিকে পরিচালিত করে দেওয়া হয়।
তবে এক্সরে এর মধ্যে অনেক পরিমাণ শক্তি থাকে যার জন্য এটা অনেক পদার্থকে খুব সহজেই ভেদ করে চলে যেতে পারে। আর এদের এই স্পেসাল গুণের জন্য ম্যাগনেটিক্যাল ফিল্ডে X-Ray একটা বিশেষ ব্যবহার খুজে পায়।
এক্সেরের সাহায্যে আমাদের শরীরের কোনো বিশেষ অঙ্গে, যেমন হারের ছবি শরীরের কোনো রকম ক্ষতি না করেই তোলা যায়। এক্সরে কোনো পদার্থের সাথে ধাক্কা খাওয়ার পর কি ফলাফল হবে সেটা ডিপেন্ট করে এক্সরেকে কতগুলো ইলেকট্রনের সাথে ধাক্কা থেকে হবে সেটার উপর।
পদার্থ যত ঘন হবে ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি হবে। সুতরাং যে পাদার্থের পারমাণবিক সংখ্যা যত বেশি হবে তাদের মধ্যে ইলেকট্রনের সংখ্যাও তত বেশি থাকবে।
আর সেই সমস্ত পদার্থগুলই এক্সরেকে তত বেশি Abjolved করে নিতে পারবে। যেহেতু আমাদের শরীরের হার ক্যালসিয়াম দিয়ে তৈরি তাই তুলনামূলক ভাবে এদের পারমাণবিক সংখ্যাও বেশি হয়।
তাই তারা এক্সরে কে খুব ভালোভাবে শোষণও করে নিতে পারে। অপরদিকে নরম কোষকলা গুলো অত ঘন হয় না এরা বেশিরভাগ নিম্ন পারমাণবিক সংখ্যার উপাদান দিয়েই তৈরি হয়।
যেমন কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ইত্যাদি। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই X-Ray আমাদের ফুসফুস এবং পেশির মত নরম টিস্যুর মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করে যায়। আর এক্সরে ফিলমে এই জায়গা গুলো অন্ধকারের মতো দেখায়।
তবে এই টুডি ছবিগুলো একটা পয়েন্ট পর্যন্ত ব্যবহার করা সম্ভব। কোনো রুগীর শরীরের মধ্যে আসলে কি হচ্ছে সেটা পরিস্কার ভাবে বোঝার জন্য, শরীরের চারেদিকে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে এক্সরে নিতে হয়।
বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলের এই বিভিন্ন ছবিগুলোকে একত্রিত করে ভেতরে কি হচ্ছে তার একটা চিত্র তৈরি করতে হয়। এটা এমন একটা টেকনিক যেটা বর্তমানে ডাক্তাররা সবসময় ব্যবহার করে থাকে।
এই টেকনিকের নাম হলো CT SCAN অথবা Computed Tomography Scan। এখন বোঝার চেষ্টা করা যাক এক্সরেকে কখন কখন ডাক্তাররা ব্যবহার করে।
আরো পড়ুন>> QR Code কি বিস্তারিত তথ্য জানুন
এক্সরেকে কখন ডাক্তাররা ব্যবহার করে
এক্সরে সাধারণত শরীরের অভ্যতরিণ ছবি তোলার জন্য ব্যবহার করা হয়। কোনো হাসপাতালে সাধারণত এক্সরে ডিপার্টমেন্ট বা রেডিওলজি ডিপার্টমেন্টে কোনো প্রশিক্ষিত বিশেষঙ্গ দ্বারায় এক্সরের ছবি তোলা হয়।
এই ধরনের প্রশিক্ষিত বিশেষঙ্গদের সাধারণত রেডিওগ্রাফার বলা হয়ে থাকে। যদিও এই কাজ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবার পেশাদারদের দ্বারাও করা যায় যেমন DENTIST। এখন প্রশ্ন হলো কখন ব্যবহার করা হয়।
এক্সরে কখন ব্যবহার করা হয়
মানুষের শরীরের বিভিন্ন যায়গায় পরিক্ষা করার জন্য এক্সরে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এটা শরীরের হার এবং জয়েন্ট গুলো দেখার জন্য ব্যবহার করা হয়।
কখনো কখনো নরম টিস্যুতেও যদি কোনো সমস্য হয় যেমন আমাদের ইন্টারনাল অরগানেও যদি সমস্যা হয় তাহলে সেখানে এক্সরের ব্যবহার হয়ে থাকে। এক্সরে মাধ্যমে যেই সমস্ত সমস্যার সমাধান করা যায় সেগুলো হলো
Bone Fracture and Brakes
Teeth Froble
Scoliosis (Abnormal Curvature of Spinal Cord)
Cancerous
Bone Tumor
Dysphagia
এই সবকিছু বাদ দিলেও ডাক্তারদের এবং সার্জারিদের বিভিন্ন মেডিকেল সমস্যায় গাইড করার জন্য এক্সরে মেশিনকে ব্যবহার করা হয়। এর পরের প্রশ্ন হলো এক্সরে করার আগে আমাদের কিভাবে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
আরো পড়ুন>> MRI Machine কী? কিভাবে কাজ করে জানুন
X-Ray করার আগে প্রস্তুতি
এক্সরে করার জন্য সাধারণত বিশেষ কিছু করতে হয় না। এক্সরে করার আগে আপনি সাধারণ ভাবে খাওয়া-দাওয়াও করতে পারবেন।
তবে যদি আপনার কন্টাস্ট এজেন্ট এক্সরে হয় তাহলে আপনার কিছু ঔষধ বন্ধ করতে হবে এবং খাওয়া দাওয়াও এরিয়ে চলতে হবে। আর সেটি যদি হয় তবে আপনার ডাক্তার আগে থেকেই আপনাকে বলে দেবে।
তবে প্রতিটা এক্সরের ক্ষেত্রেই আপনি যদি প্রেগনেন্ট বা গর্ভবতী হন তাহলে সেটা আপনাকে আগে থেকেই জানিয়ে দিতে হয়। যদি কোনো মহিলা প্রেগনেন্ট হয় সাধারণত ডাক্তার তাকে এক্সরে করে না।
যদি খুবই ইমারজেন্সি হয়ে যায় তাহলে ডাক্তাররা রিকমেন্ট করলেও করতে পারে। এক্সরে করার সময় লুজ কাপড়-চোপড় পড়ে যাওয়াটাই বুদ্ধিমানে কাজ। তবে মাথায় রাখতে হবে আপনার শরীরে যেন কোনো স্বর্ণ না থাকে।
যদি থাকে তাহলে এক্সরের আগে সেগুলো খুলে রাখতে হয়। এক্সরের সময় আপনাকে একটা টেবিলের উপর শুয়ে পড়তে বলা হতে পারে অথবা কোনো সোজা জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে বলা হতে পারে।
যাতে আপনার শরীরের অঙ্গ প্রতঙ্গ গুলো পরিস্কারভাবে দেখা যায় এবং সঠিক পজিশনে থাকে। এক্সরে মেশিন যেটাকে অনেকটা টিউবের মতো দেখতে হয় এবং যার মধ্যে একটা বড় বাল্প থাকে, সেটাকে খুব কেয়ারফুলি আপনার শরীরের যেই জায়গায় এক্সরের দরকার সেদিকে এম করা হয়।
যে রেডিও গ্রাফার থাকবে সে ঐ মেশিনের পেছন থেকে মেশিনটাকে অপারেট করবে অথবা অন্য রুম থেকেও অপারেট করতে পারে।
এক্সরেটা কয়েক পলকের মধ্যে, মানে আপনার বোঝার আগেই কম্পিলিট হয়ে যায়। এক্সরে যখন নেওয়া হয় তখন নরাচড়া করা যায় না। কারণ তাতে ছবিটা ব্লার হয়ে যায়। এখন প্রশ্ন হলো এক্সরের পরে কি হয়?
>> X-ray বা এক্সরে মেশিন কি
X-Ray করার পর কি হয়
আপনি একটি সাধারণ স্টান্ডার এক্সরের পরে কোনো কিছুই অনুভব করতে পারবেন না। আর তার সাথে এক্সরের পরে আপনি বাড়িও চলে যেতে পারবেন। এছাড়াও ডেলি লাইফের কাজেও আপনি নিযুক্ত হয়ে যেতে পারবেন।
এক্সরে করার রেজাল্ট দেওয়ার আগে একজন ডাক্তার যে রেডিও থেরাপি করে, সে পরিক্ষা নিরিক্ষা করে তারপর রেজাল্ট দেয়। এসব কিছু জানার পর অনেকের মনে হতে পারে এক্সরে করা আমাদের শরীরের জন্য কতটা সেফ।
X-Ray করা শরীরের জন্য কতটা Save
আপনার শরীরের যেই জায়গায় এক্সরে করা হবে হয়তো সেই জায়গায় কিছুটা অসস্তি হতে পারে। এক্সরে করার ফলে অনেক সময় কেন্সারও হতে পারে।
তবে এর সম্ভাবনা অনেক কম। হয়তো ১ লক্ষের মধ্যে একজনের ক্যান্সার হতে পারে। ডাক্তাররা আপনার শরীরের অবস্থা বুঝে এক্সরে করার জন্য বলে। এই বিষয়ে আরো জানতে হলে Welcome to GOV.UK ওয়েবসাইটটি ভিসিট করে আসতে পারেন।
>> X-ray বা এক্সরে মেশিন কি
>> X-ray
2 Comments on “X-ray বা এক্সরে মেশিন কি? বিস্তারিত তথ্য”